গ্রেপ্তার ইস্যুতে যা বললেন নুসরাত ফারিয়া

জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। শুরুতে শোবিজে পা রাখেন উপস্থাপিকা হিসেবে। তবে তাকে দর্শকমহলে পরিচিতি এনে দিয়েছে নায়িকা হিসেবে। দুই বাংলাতেই গ্ল্যামার আর অভিনয় প্রতিভার মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন তিনি। কাজের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও বেশ গোছালো এই চিত্রনায়িকা।
তবে এ বছরের মে মাসরে ১৮ তারিখ থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে অভিনেত্রীকে ভাটারা থানার জুলাইয়ে হওয়া একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সে সময় ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করায় শিল্পাঙ্গনের অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।
গ্রেপ্তারের দুইদিন পর অথাৎ ২০ মে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিন প্রদান করেন। এরমধ্যে কেটে গেছেন প্রায় চার মাস। হত্যা মামলায় জামিনের দীর্ঘদিন পর অবশেষে গ্রেপ্তার ইস্যুতে মুখ খুললেন এই হার্টথ্রব নায়িকা।
সম্প্রতি নিউইয়ার্ক থেকে প্রচারিত বাংলা ভাষাভাষীদের গণমাধ্যম ‘ঠিকানা’য় ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’ নামের বিশেষ শোতে এ বিষয়ে নুসরাত ফারিয়া তার বিরতি ভাঙেন।
তিনি বলেন, ‘এরকম কিছু হবে আশা করেনি। কখনও দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। যার জীবন স্কিন কেয়ার, মেকআপ, একটু ঘোরাফের, শপিং করা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও ভালো খেতে যাওয়া এই ছোট ছোট জিনিস নিয়ে যে খুশি। তার জীবনে এত জটিলতা! কি করব না করব এগুলো নিয়ে যখন চিন্তা করতে হয় তখন ভীষণ হতাশ হই। আমি মনে করি, এটাকেই বড় হওয়া বলে। পরিস্থিতি মানুষকে বড় করে। আমার মনে হয় পুরো ঘটনাতে আমি অবশ্যই মানসিকভাবে বড় হয়েছি। এবং ওইটার (গ্রেপ্তার) পর এটা আমার প্রথম সাক্ষাৎকার। আমি কোথাও কথা বলিনি। এমন না যে আমি কথা বলতে চাইনি। আমি এখনও কথার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, আমার সঙ্গে যেটা হয়েছে, সেটা অন্য কারো সঙ্গে হতে পারত। অনেকের সঙ্গেই হয়তোবা হচ্ছে, হবে। আমি এ বিষয়ে জানি না। তবে আমি ভাগ্যবান। আমার কাজের মাধ্যমে গোটা দেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। যাদের দোয়া ভালোবাসার কারণে আমি আজকে আপনার (জায়েদ খান) সামনে দাড়িয়ে আছি। আমার পরিবার, বাবা-মা, ভাই-বোন তাদের সকলের দোয়া এবং ভালোবাসার কারণে কঠিন সময় পার করতে পেরেছি।’
হত্যা মামলায় জামিনের অল্প কিছুদিনের মধ্যে নিজের চেনা পরিবেশে ফেরেন নুসরাত। অভিনেত্রীর কথায়, ‘তার (গ্রেপ্তার) ঠিক ১০-১৫ দিন পর থেকে আমি আবার কাজ করা শুরু করেছি। তবে পুরো ঘটনাটা আমাকে একটা জিনিস শিখিয়ে দিয়েছে, কোনো কিছুই স্থায়ী না। জীবন খুবই অস্থায়ী, অনিশ্চয়তা ভরা। যেকোনো সময় যেকোনো কিছু হতে পারে। এইজন্য নিজেকে মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। তুমি যদি সৎ থাকো তাহলে পৃথিবীর কোনো খারাপ শক্তি তোমাকে আটকে রাখতে পারবে না। তোমাকে বিপদের সম্মুখীন করবে কিন্তু সেই বিপদ থেকে সৃষ্টিকর্ত নিজেই তোমাকে বাচিয়ে নিয়ে আসবেন। এটা আমার জীবন থেকে পাওয়া সবচেয়ে বড় শিক্ষা।’
সাংবাদিক এবং শোবিজের সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অভিনেত্রী। নুসরাতের তিনি জানান, ‘আমি আমার দর্শকদের কাছে কৃতজ্ঞ কারণ, তারা যেভাবে একসাথে হয়ে আমার জন্য কথা বলেছেন। আমার মিডিয়ার সহকর্মীরা, সাংবাদিক ভাই-বোনেরা, জন্মেরর পর থেকে এখন অব্দি যাদেরকে চিনি প্রত্যেকটা মানুষ আমার জন্য কথা বলেছেন, কেঁদেছেন। শিল্পী নুসরাত ফারিয়া হিসেবে আমার মনে হয় না এর থেকে বড় অর্জন পাওয়ার আছে।’
প্রসঙ্গত, নুসরাত ফারিয়ার জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তগুলোর একটি ছিল প্রেমিক রনি রিয়াদ রশিদকে ছেড়ে আসা। দীর্ঘ ১০ বছরের প্রেম ও ২০২০ সালে ধুমধাম করে হওয়া বাগদানের আনন্দ একসময় থেমে যায় বিচ্ছেদের মধ্যদিয়ে।
ভিওডি বাংলা/ এমপি