রানাপ্লাজা দিবস : অনেকেই ভুলে গেছেন এই দিনের স্মৃতি


লেঃ জেনারেল ড. চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী
আজ ২৪ এপ্রিল, রানাপ্লাজা দিবস। ২০১৩ সালের এই দিনের স্মৃতি হয়তোবা অনেকেই ভুলে গেছেন। ভুলেনি সহস্রাধিক নিহত শ্রমিকের পরিবার, আরো সহস্র আহত মানুষ, ট্রমায়/ ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত কয়েকশো উদ্ধারকর্মী, ভুলিনি আমি। সারাজীবন ফুসফুসের যন্ত্রণা মনে করিয়ে দেয় আমাকে দুঃসহ রানাপ্লাজা গার্মেন্টসের সেই ধ্বংসযজ্ঞ, হাজারো প্রাণের কান্না, বাঁচার আকুতি। আমি ছিলাম সেদিন ওই হাজার হাজার আহত/ নিহতের মাঝে। আমি আছি এখনও জীবিত মৃতদের মাঝে। এরা কেউ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায়নি। বিরাট অংকের সাহায্য এসেছিল বিদেশীদের থেকে, স্থানীয় লোকজন অকাতরে দান করেছে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। কোথায় সে দানের অর্থ ? কারা খেয়ে ফেলেছে শত শত কোটি টাকা ? আমি হাইকোর্টের নির্দেশে প্রধান হিসেবে কমিটি নিয়ে কাজ করি ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের জন্য। আমাদের প্রস্তাব ছিল ন্যূনতম ১৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য। ঐ প্রস্তাবে নোট অফ ডিসেন্ট দেয় বিজেএমইএ প্রতিনিধি। তারা বাংলাদেশের শ্রম আইনের দোহাই দেয়। অথচ এই শ্রম আইন শ্রমিক বিদ্বেষী।
আমাদের দেয়া ক্ষতিপূরণ প্রস্তাব হাইকোর্টের নির্দেশের পরও কার্যকর করেনি স্বৈরাচারী সরকার। রানা প্লাজা ধস ছিল লোভ, লালসা, মানবধিকার লঙ্ঘন ও মানব মর্যাদার প্রতি চরম অবহেলার নজির। এই দুর্ঘটনা ছিল মানবসৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের নিকৃষ্ট উদাহরণ। আমলা ও স্বৈরাচারী রাজনীতির দুর্নীতির নির্জলা দৃষ্টান্ত। আমার হারিয়ে যাওয়া সেই শ্রমিক ভাইদের স্মরণে বিনম্র শ্রদ্ধা। মহান আল্লাহ আপনাদের শহিদী মর্যাদা দান করুন। দুনিয়ার মজদুর এক হও। শ্রমিক হত্যা বন্ধ করো। বিপ্লবী লাল সালাম।
লেখক: প্রেসিডিয়াম সদস্য, এলডিপি
[নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। ভিওডি বাংলা সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, ভিওডি বাংলা কর্তৃপক্ষের নয়]
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ