• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১
টপ নিউজ
কালিহাতী নার্সিং ইনস্টিটিউট এন্ড কলেজ শিক্ষার্থীদের ফুড ফেয়ার তারাকান্দি ফাজিল মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি : আবদুস সালাম মোহনগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস দেশের স্বার্থে কাজ করবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় শ্রমিকলীগের নেতা গ্রেপ্তার ‎গাইবান্ধায় জেলা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩২ জন গ্রেপ্তার মাদকের বিরুদ্ধে কলাবাড়িয়া একতা যুব সঙ্গের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত শহীদদের স্মরণে ছাত্রদলের দোয়া ও মিলাদ মাহফিল আ. লীগের কেন্দ্রীয় অফিস দখল, চলছে পরিচ্ছন্নতার কাজ ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল গণঅধিকার পরিষদ

চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে অচলাবস্থা, ভোগান্তিতে রোগীরা

   ৩১ মে ২০২৫, ০২:২৭ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক
শান্তা আক্তার সাভার থেকে মায়ের চিকিৎসা করাতে এসেছেন। গত বৃহস্পতিবার তাঁর মায়ের চোখের অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল। কিন্তু রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় তা হয়নি। হাসপাতালের ফটকে কথা হলো শান্তার সঙ্গে। বললেন, ‘চোখের জন্য অন্য কোথাও ভালো চিকিৎসাসেবা না থাকায় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালই ভরসা। কিন্তু অস্ত্রোপচারের তারিখ চলে গেছে। মায়ের চোখের অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। দ্রুত অস্ত্রোপচার না হলে বড় সমস্যায় পড়তে হবে।’

চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মারামারি-সংঘর্ষের জেরে শনিবার চতুর্থ দিনের মতো রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।

গত বুধবার সকাল থেকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এমন অচলাবস্থা চলছে। চিকিৎসাসেবা কখন চালু হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী আর স্বজনেরা। অনেকেই সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অস্ত্রোপচারের জন্য যাঁরা অপেক্ষা করছেন, তাঁদের কষ্ট আরও বেশি।

সিরাজগঞ্জ থেকে মেয়ে জেসমিন আক্তারকে চোখের চিকিৎসক দেখাতে এনেছেন বাবুল হোসেন। কিন্তু হাসপাতালে এসে দেখেন সেবা বন্ধ। আজ জেসমিনের অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল। এখন চিকিৎসাসেবা চালু হওয়ার অপেক্ষায় আছেন বাবা-মেয়ে।

বাবুল হোসেন বলেন, ‘আগে কখনো এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। যদি অস্ত্রোপচার না করতে পারি, তাহলে সিরাজগঞ্জে ফেরত যেতে হবে। মেয়ের চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ছে। দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত হয়ে ছয় মাস ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোহান মাহমুদ। দ্রুত চিকিৎসাসেবা চালু হবে এটাই চাওয়া তাঁর। রোহান বলেন, ‘এই হাসপাতালে যাঁরা আছেন, তাঁদের কারও এক চোখ নষ্ট। কেউবা চোখে ঝাপসা দেখেন। কারও ভালো চোখেও ধীরে ধীরে সমস্যা বাড়ছে। এই অবস্থায় আমরা কোথায় যাব?’

সকালে ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তারা কেউ আসেননি। শতাধিক রোগী হাসপাতালের ফটকে অপেক্ষা করছেন। তাঁদের সবাই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চিকিৎসক দেখাতে এসেছেন। চিকিৎসা না পেয়ে অনেককে ফিরে যেতে দেখা গেল।

এই হাসপাতালে যাঁরা আছেন, তাঁদের কারও এক চোখ নষ্ট। কেউবা চোখে ঝাপসা দেখেন। কারও ভালো চোখেও ধীরে ধীরে সমস্যা বাড়ছে। এই অবস্থায় আমরা কোথায় যাব?
রোহান মাহমুদ, হাসপাতালটিতে থাকা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা জানান, বর্তমানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত হয়ে চিকিৎসা নেওয়া রোগী আছেন ৬০ থেকে ৭০ জন। আর কিছু সাধারণ রোগী এখনো হাসপাতালে আছেন। চিকিৎসা মাঝপথে থাকায় তাঁরা কোথাও যেতে পারছেন না। তাঁদের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০।

মারামারি-সংঘর্ষের পর থেকে হাসপাতালটিতে নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে আনসার ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সেখানে থাকা আনসার ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবারের পর থেকে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তারা আসছেন না।

আবু সুফিয়ান নামের এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘আমাদের কাজ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। চিকিৎসাসেবা কবে নাগাদ চালু হবে, সে বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগী-স্বজনেরা ফিরে যাচ্ছেন।’

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম গতকাল শুক্রবার বলেছিলেন, ‘হাসপাতাল বন্ধ। কোনো চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী প্রবেশ করতে পারছেন না। তাই কবে নাগাদ পুনরায় সেবা চালু হবে, সেটা জানা নেই। হাসপাতালে কোনো রোগীর অবস্থানের তথ্যও আমার কাছে নেই।’

অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমানের সরকারি বাসভবনে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ে একটি সভা হয়। একাধিক উপদেষ্টা, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুজন নেতা, ইনস্টিটিউটের পরিচালকসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা যেসব চিকিৎসক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছেন, তাঁদের আপাতত হাসপাতালে না পাঠানোর বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে ফেরত আসা রোগীদের ফলোআপ চিকিৎসা, বিদেশে আর কোন কোন রোগীকে পাঠানো হতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেন, হাসপাতালে পুরোপুরি সেবা চালু করতে হয়তো একটু সময় লাগবে।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চলতি বছর ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত ৬২ মৃত্যু
চলতি বছর ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত ৬২ মৃত্যু
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১১৪
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১১৪
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩৭৫ জন
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩৭৫ জন