সরকারের সঙ্গে দলগুলোর খোশ-নাখোশের রাজনীতি !


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ককে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা দেখা দিয়েছে। বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে একরকম খোশ-নাখোশের চিত্র তৈরি হয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারকে বরাবরই চাপে রেখেছে বিএনপি। দলটি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এই নির্বাচন সম্পন্ন করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছিল। গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধ্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন সহসাই হবে কি না— এ নিয়ে যে ধোঁয়াশা ছিল তা অনেকটা কেটে যায়। তবে বিএনপি তাদের দাবিতে অটল ছিল।
এরপর লন্ডনে চার দিনের সফরে গেলে সেখানে ১৩ জুন ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক হয়। এরপর যৌথ বিবৃতিতে আগামী রমজানের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা উঠে আসে। বিষটিকে অনেকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন এ কারণে যে, সরকারের ঘোষিত সময় এপ্রিল এবং বিএনপির দাবি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি একটা সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভবনা তৈরি হয়েছে।
এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানের পর যেসব বিষয় সংস্কারের দাবি উঠেছে সেগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ জুন) কমিশনের বৈঠকে অংশ নেয়নি জামায়াত ইসলামী। দলটির নেতাদের ভাষ্যমতে, তারা গোসসা করেছে লন্ডনের বৈঠকের ঘটনায়। দলটি বলছে, সরকার বিএনপির সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দেওয়ার মাধ্যমে অন্য দলগুলোকে ‘অগুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে উপস্থাপন হয়েছে।
অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যেহেতু সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর বিভিন্ন পক্ষের পৃথক বিবৃতিতে জাতির কাছে ভিন্ন বার্তা যায়। তাই দুই পক্ষের সমন্বয়ে আলোচনার বিষয়াবলীর সারাংশ তুলে ধরে জাতিকে অভিন্ন বার্তা দেওয়াই যৌথ বিবৃতির উদ্দেশ্য।
এদিকে মঙ্গলবারের বৈঠকে না এলেও আজ বুধবার (১৮ জুন) ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়েছে জামায়াত। সেখানে দলটির নেতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানিয়েছেন, প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে আগের দিনের বৈঠকে তারা ছিলেন না। পরে প্রধান উপদেষ্টা জামায়াত আমিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরপেক্ষতার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। অবশ্য আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকে অংশ নেয় জামায়াতের প্রতিনিধি দল।
আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এও বলেছেন, লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছে তার দল। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়েও আপত্তি ছিল না। আলোচনার মাধ্যমে তা পরিবর্তন হতে পারতো। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন, যা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এতে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও বিব্রত হয়েছে। বিএনপিকে নিয়ে নয়, যৌথ বিবৃতি ও বিফ্রিং নিয়েই জামায়াতের আপত্তি।
অন্যদিকে বুধবারের বৈঠকে অন্য দলগুলোর চেয়ে বক্তব্যের সময় জামায়াতকে বেশি দেওয়া হয়েছে। আর এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বৈঠকে অংশ নেওয়া অন্য তিনটি রাজনৈতিক দল। এই দলগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণফোরাম ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। যদিও অন্য দলগুলো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেছি। অন্য দলগুলোর মধ্যে বৈঠকে আরও ছিল বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, সিপিবি, এবি পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, গণফোরাম, বাসদের প্রতিনিধিরা।
এতো খোশ-নাখোশের মধ্যে অধ্যাপক ইউনূস বরাবরই দলগুলো নিয়ে ঐক্য ধরে রাখার কথা বলে আসছিলেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন সংস্কার ইস্যুতেও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বার বার আলোচনা করছে তার সরকার। সংস্কারের বিভিন্ন ইস্যু এখনও অমীমাংসিত। কিছু বিষয় দলগুলো একমত হয়েছে।
জামায়াত ইসলামী, এনসিপিসহ কিছু ইসলামী দল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চাপ দিয়ে আসছে। আর বিএনপি বলছে সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। তাই নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো শেষ করার মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত। সব মিলিয়ে অধ্যাপক ইউনূস শেষ পর্যন্ত দলগুলোর কতোটা মন রক্ষা করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারেন তার ওপর নির্ভর করছে আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে- আমিনুল
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
যারা দিনের বেলা বিএনপি করেছে আর রাতের বেলা …

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বর্তমান পদ্ধতি বহাল চায় বিএনপি: সালাহউদ্দিন
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে চলমান পদ্ধতি বহাল চেয়েছে বিএনপি। আজ …

অডিওর কথা স্বীকার করলেন এনসিপি নেত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি নেতা সারোয়ার তুষারের সঙ্গে …
