অধিনায়ক মিরাজের দায়িত্ব ও প্রত্যাবর্তনের গল্প


ক্রীড়া প্রতিবেদক
মুস্তাফিজুর রহমানের ফিল্ডিংয়ে সমস্যা নতুন কিছু নয়। তাই বরাবরই তাঁকে নিরিবিলি কোনো পজিশনে রাখা হয়। কিন্তু প্রেমাদাসায় সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বল ঠিকই খুঁজে নেয় তাঁকে। সিঙ্গেল থেকে ডাবলস নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় বিরল এক দৃশ্যের জন্ম দিলেন নতুন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। মুখে কী বলেছেন বোঝা যায়নি, তবে অঙ্গভঙ্গিতে স্পষ্ট— ‘এটা চলবে না।’
দীর্ঘদিন ধরেই মাঠে পারফরম্যান্স, দলে গ্রহণযোগ্যতা আর শান্ত স্বভাবের কারণে ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিলেন মিরাজ। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্ব পেতে সময় লেগেছে। কারণ, সবাইকে খুশি রাখার এই চেষ্টার ভিড়ে কোথাও যেন ‘কর্তৃত্ব’ হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। নেতৃত্ব মানে শুধু জনপ্রিয়তা নয়, দরকার দৃঢ়তা ও সিদ্ধান্তে স্পষ্টতা— মিরাজের অধিনায়কত্বের প্রথম পাঠে সেটাই উঠে এসেছে।
ওয়ানডে সিরিজের শুরু থেকেই নেটে বাড়তি মনোযোগ, টিপস দেওয়া, ব্যাটিং-বোলিং দুই দায়িত্বে নিজেকে প্রস্তুত রাখা— মিরাজের অধিনায়কত্বের চেহারা আঁচ করা যাচ্ছিল। মাঠে সেই দৃশ্য আরও পরিষ্কার। বোলিং মার্ক পর্যন্ত গিয়ে বোলারকে পরামর্শ দেওয়া, ফিল্ডিং সাজানো, ভুল করলে ধরিয়ে দেওয়া— নেতৃত্বের প্রতিটি রূপ দেখা গেছে তার মধ্যে।
আরেকটি দৃষ্টান্তমূলক বিষয় হলো, মাঠে দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ড্রেসিংরুমের দিকে তাকাচ্ছেন না তিনি। তার মানে, দলের জন্য নিজস্ব ক্রিকেটীয় চিন্তা-ভাবনা প্রয়োগ করছেন এবং সেই স্বাধীনতা পাচ্ছেনও।
প্রথম দুই ওয়ানডেতে বোলিং-ফিল্ডিং পরিচালনায় সফল বলা যায় মিরাজকে। নাজমুল হোসেন শান্তর খণ্ডকালীন স্পিন ব্যবহার করে প্রথম ম্যাচে সাফল্য পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় ম্যাচে শামীম হোসেনের ওপর আস্থা রেখেও পেয়েছেন সুফল। তবে একটা ভুল ছিল— ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে মুস্তাফিজকে বোলিংয়ে আনা। সেই ওভারে ১৭ রান তোলে শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ম্যাচের ব্যাটিং বিপর্যয় (৫ রানে ৭ উইকেট) আর মিরাজের হতাশাজনক অভিষেকের যন্ত্রণাটা তাই থেকে গেছে। মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করে দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছেন (০ ও ৯ রান)। বিশেষ করে দ্বিতীয় ম্যাচের পুল শটে উইকেট বিলিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।
তবুও দ্বিতীয় ম্যাচের ১৬ রানের জয় বদলে দিয়েছে পরিস্থিতি। টানা সাত হারের পর নতুন অধিনায়ক মিরাজের হাত ধরে জয়ের মুখ দেখেছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে ভেঙেছে মিরাজের নিজস্ব বোলিং খরা— টানা পাঁচ ম্যাচ উইকেটশূন্য থাকার পর অবশেষে সাফল্য।
৮ জুলাই পাল্লেকেলেতে তৃতীয় ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে তাই জয়ের স্বপ্ন দেখছেন অধিনায়ক মিরাজ। চাপ কিছুটা কমেছে, আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। নিজের পারফরম্যান্সের ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার আরেকটি সুযোগও সামনে।
অধিনায়ক হিসেবে প্রথম পাঠেই মিরাজ বুঝিয়ে দিয়েছেন— মাঠে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি কর্তৃত্ব থাকাও জরুরি। শৃঙ্খলা ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকলে সেই নেতৃত্ব দীর্ঘস্থায়ী হয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, যেটির ভবিষ্যৎ কতটা উজ্জ্বল হবে, তা সময়ই বলবে।
ভিওডি বাংলা/ডিআর
পাকিস্তানের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতে দীর্ঘ ৯ বছরের অপেক্ষার …

ফিনালিসিমার সম্ভাব্য ভেন্যু এবার উরুগুয়ে
কোপা আমেরিকা ও ইউরো চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে আয়োজিত ‘ফিনালিসিমা …
