রাজারহাটে নদী ভাঙনে ১৫ বাড়ি বিলীন


রাজারহাটে তিস্তা নদীর ভাঙনে লোকজনের মাথা গোঁজার জায়গা বিলীন হয়ে পড়ছে। নদীর তীরে ভাঙন কবলিত চর গতিয়াসামে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ জন মানুষ বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছে। হতদরিদ্র ফুলমতি বেগম বলেন, “নদীর তীরে আমাদের বাড়ি, জমি নেই। কেউ আমাদের জায়গা দিচ্ছে না। বাড়িঘর ভেঙে অন্যের জমিতে সামান্য মালপত্র রাখছি। কেউ আমাদের খোঁজখবর নিচ্ছে না।”
খলিল মিয়া জানান, জন্মের পর থেকে আমাদের ভিটায় বাড়ি ছিল। এবার সব সম্পত্তি নদী খেয়ে গেছে। দুই ছেলে শাহীন ও ছামিউলের সঙ্গে রাতভর আসবাবপত্র নিয়ে পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাটের গোকুন্ডা ইউনিয়নে ৭০ হাজার টাকায় জমি নিয়েছি। এখন সেখানেই থাকবো।
চর গতিয়াসামের অন্যান্য ভাঙন কবলিতদের অধিকাংশ সরিষাবাড়ি বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন, কেউ কেউ রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার চর ঢ়ুষমারা ও চর গণাইয়ে বা লালমনিরহাটে আশ্রয় নিয়েছেন।
বক্তার মিয়া জানান, সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নদী ভাঙনের ফলে মাত্র ৫ ঘণ্টায় ১৫টি বাড়ি বিলিন হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বক্তার আলী, রফিকুল খাঁ, আফতাব খাঁ, তোফাজ্জল, সিরাজ, মোন্নাফ, শাকারুল, মমিনুল, উমর আলী, সাইফুল, ছামিরুল, সাইদুল, ফারুক, শাহিন ও খলিলের বাড়ি।'
চর খিতাব খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাহবুব রশীদ বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে রক্ষা হবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগ ফেলে এবারের মতো স্কুলটি রক্ষা করা গেলেও আগামী বন্যায় কি হবে বলা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই প্রায় দেড়শ বাড়ি ভাঙনের ফলে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে না।’
সাবেক মেম্বার সহিদুল ইসলাম জানান, গত ৪ দিনে তিস্তার তীব্র ভাঙনে প্রায় ৭০টি বাড়ি বিলিন হয়েছে। উপজেলা পরিষদে ২৫টি বাড়ির তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ৪টি বাড়িতে খিতাব খাঁয়ে ও ৬টি বাড়িতে চর গতিয়াসামে ঢেউটিন ও অর্থ বিতরণ করা হয়েছে, বাকিরা এখন হা-হুতাশ করছে।’
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আশাদুল হক বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত ৬৩টি বাড়ি ভাঙনের তথ্য আছে। আগামীকাল প্রতিটি পরিবারকে মাথা প্রতি ৩০ কেজি চালসহ সহায়তা দেওয়া হবে। যারা খাদ্য সংকটে ভুগছেন, তাদের জন্য আমরা সবরকম সহায়তার পাশে থাকব।’
ভিওডি বাংলা-প্রহলাদ মন্ডল সৈকত/জা