• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

যেসব কারণে গোড়ালিতে ব্যথা হয়ে থাকে

   ২০ মে ২০২৫, ০৭:৫১ পি.এম.
ফাইল ছবি

শারমিন হোসেন (পিটি)
ইদানীং অনেকেই গোড়ালি-ব্যথায় ভোগেন। এর সাধারণ কারণ হলো মচকে যাওয়া বা গোড়ালির চারপাশের লিগামেন্টগুলো প্রসারিত বা ছিঁড়ে যাওয়া। এ ছাড়া কারণগুলো হলো প্লান্টার ফ্যাসাইটিস, ক্যালকেনিয়াম স্পার, গেটেবাত, বারসাইটিস, টারসাল টানেল সিনড্রোম, অ্যাকিলিস টেন্ডিনাইটিস, হাড়ভাঙা বা হাড়ক্ষয় (অস্টিওপোরোসিস) ইত্যাদি।

যাদের বেশি হয় : দীর্ঘদিন ধরে যারা শক্ত সোলের জুতা ব্যবহার করছেন, তাদের হতে পারে। স্থূলতা, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করা, পেলভিস পোস্টেরিয়র টিল্ট বা নকনির জন্যও গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। তুলনামূলকভাবে নারীদের এ ব্যথা বেশি হয়, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়। জন্মগত ফ্ল্যাট ফুট বা উঁচু আর্চের পায়ের জন্যও গোড়ালি ব্যথা হতে পারে।

সাধারণ চিকিৎসা : আক্রান্ত পা বিশ্রামে রাখতে হবে। ব্যথার স্থানে ৭-১০ মিনিট দিনে ৩বার বরফ দিন। ইনজুরির স্থানে কম্প্রেশন ব্যান্ডেজ ব্যবহার করুন। আরামদায়ক জুতা পরুন। ব্যথা কমাতে ননস্ট্রেরয়েডাল অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ড্রাগস গ্রহণ করুন। পা উঁচুতে রাখুন। এতে ফোলাভাব কমে যাবে, রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে।

ফিজিওথেরাপি বর্তমানে জনপ্রিয় চিকিৎসা-পদ্ধতি। দক্ষ ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর শারীরিক পরীক্ষা এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করেন। নিয়মিত কয়েক সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি সেশনের মাধ্যমে রোগীরা অনেকটাই উপকৃত হন। ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, লেজার, আল্টাসাউন্ড, টেপিং ও কিছু এক্সারসাইজের মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। কিছু ব্যায়াম আছে, যেগুলো ঘরে বসে খুব সহজেই করা যায়।

গোড়ালি-ব্যথার ব্যায়াম : দেয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে গোড়ালি তুলে পায়ের বৃদ্ধা আঙুলের ওপর ভর করে দাঁড়ান এবং ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এ ব্যায়ামটি ১০বার করুন দিনে ৩বার। একটি পানির বোতল ভরে ফ্রিজে রাখুন। বরফ জমে গেলে বোতলটি পায়ের নিচে রেখে ৩০ সেকেন্ড ফুটরোল করুন। এভাবে দিনে ৩বার করুন। একটি ফিতা বা চোয়ালে নিয়ে পায়ের পাতার সামনের অংশে আটকে দুই হাত দিয়ে হালকা করে টানুন এবং ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। দিনে ৩বার করুন। একটি টেনিস বল নিয়ে পায়ের গোড়ালি থেকে পাতা পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ বার রোল করুন দিনে ৩বার। হাত দিয়ে পায়ের পাতায় কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে আস্তে আস্তে চাপ দিয়ে ম্যাসেজ করুন। এ ম্যাসেজটি দিনে ৩বার করুন একই নিয়মে।

যে কোনো দেয়ালের সামনের দাঁড়ান। একটি পা সামনে ও অপর পা পেছনের দিকে সোজা করে রাখুন। সামনের পায়ের হাঁটু ভাঁজ করুন। পেছনের পায়ের হাটু ভাঁজ না করে একদম সোজা রাখুন। দুই হাত দিয়ে দেয়ালে ভর দিন। এ সময় আপনার পেছনের পা এবং গোড়ালিতে টান অনুভব করবেন। একই পজিশনে পেছনের পা সামনে এনে ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এভাবে দুই পায়ে দশবার করে দিনে তিনবার করুন।

ফিজিওথেরাপিস্টের কাছে যখন যাবেন : আক্রান্ত পায়ে ভার রাখতে যদি তীব্র ব্যথা হয়; পায়ের আকৃতির যদি কোনো পরিবর্তন ঘটে; যদি ব্যথার অবনতি হয়; হাঁটার সময় আক্রান্ত পায়ের ভারসাম্য যদি বজায় না থাকে; ১৪ দিন পরও যদি ব্যথা স্থায়ী হয়; উষ্ণতা, ফোলা বা লাল ভাব যদি থাকে।

প্রতিকার : উঁচু ও শক্ত সোলের জুতা পরবেন না। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করবেন না। অতিরিক্ত অসম পৃষ্ঠে চলাচল করবেন না। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সামুদ্রিক মাছ, শাকসবজি ও ফলমূল রাখুন। দেহে ভিটামিন-ডি’র সঠিক মাত্রা নিশ্চিত করুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। আঘাত রোধ করতে যে কোনো শারীরিক ক্রিয়াকলাপের আগে ও পরে জয়েন্টগুলো সঠিকভাবে ওয়ার্মআপ ও কুল ডাউন করার জন্য সময় নিন।

লেখক : ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট; আলোক, মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা। 

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সকালের নাশতায় ডিম সেদ্ধ নাকি ভাজা, কোনটা খাবেন?
সকালের নাশতায় ডিম সেদ্ধ নাকি ভাজা, কোনটা খাবেন?
ওষুধ ছাড়াই কোলেস্টেরল কমানোর উপায়
ওষুধ ছাড়াই কোলেস্টেরল কমানোর উপায়
সুস্থতায় মোরিঙ্গা চা !
সুস্থতায় মোরিঙ্গা চা !